যেসব কারণে হঠাৎ ওজন কমে যায়

0
wvPewvU‡

অনেকেই ওজন কমানোর জন্য ডায়েট ও ব্যায়াম করেন। ওজন কমানোর চেষ্টায় সফল হওয়া নিঃসন্দেহে আনন্দের বিষয়। কিন্তু হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। যদি ৬ মাসের মধ্যে আপনার শরীরের ওজনের ৫ শতাংশ বা তার বেশি কমে যায়, যেমন ৬০ কেজি থেকে ৫৭ কেজি, তবে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

জেনে নিন কোন কোন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে পারে-
১. থাইরয়েডের সমস্যা

হাইপারথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড হরমোন বৃদ্ধির কারণে কারণে মেটাবলিজম দ্রুত হয়ে যায়। ফলে খাওয়া সত্ত্বেও শরীর পুষ্টি পায়না ও ওজন কমতে থাকে।

২. টাইপ ১ বা অনিয়ন্ত্রিত টাইপ ২ ডায়াবেটিস

রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের মাধ্যমে শর্করা বেরিয়ে যায়, ফলে ওজন কমে যায়। সময়মতো ডায়াবেটিস শনাক্ত না হলে রোগী অজান্তেই রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে থাকে। তাই হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করলে ডায়াবেটিস টেস্ট করান।

৩. ক্রোনস্ ডিজিজ বা আলসারেটিভ কোলাইটিস

ক্রোনস্ ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস হলো পাচনতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহজনিত রোগ বা আইবিডি। ক্রোনস্ মুখ থেকে মলদ্বার পর্যন্ত যেকোনো অংশে হতে পারে, তবে আলসারেটিভ কোলাইটিস শুধু বৃহদান্ত্র ও মলদ্বারকে প্রভাবিত করে। ক্রোনস্-এ প্রদাহ গভীর স্তরে হয়, আর কোলাইটিসে শ্লেষ্মা স্তরে ক্ষত সৃষ্টি করে। উভয় ক্ষেত্রে পেটব্যথা, ডায়রিয়া, রক্তপাত ও ওজনহ্রাস দেখা দেয়। অন্ত্রে প্রদাহের কারণে খাবার ঠিকমতো শোষণ হয় না।

৪. সিলিয়াক ডিজিজ

সিলিয়াক ডিজিজ হলো একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে গ্লুটেন (গম, যব, রাইয়ে থাকা প্রোটিন) খাওয়ার পর ক্ষুদ্রান্ত্রের শোষণকারী আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। এতে পুষ্টিশোষণ ব্যাহত হয়। ফলে ডায়রিয়া, ওজনহ্রাস, রক্তশূন্যতা ও অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

৫. লিভার বা অগ্ন্যাশয়ের রোগ

পিত্তরস কমে গেলে হজমে সমস্যা হয়। এর ফলে শরীর পুষ্টির অভাবে জমিয়ে রাখা শক্তি খরচ করে ওজন কমিয়ে ফেলে।

৬. ক্যান্সার

অনেক ধরনের ক্যান্সার, যেমন- প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, লিউকেমিয়া, শরীরের শক্তি ক্ষয় করে। একে ক্যাশেক্সিয়া বলে। এতে পেশি ও চর্বি দ্রুত কমে যায়, ফলে হঠাৎ শরীরের ওজন কমে যেতে পারে।

৭. সংক্রমণ বা ইনফেকশন

যক্ষ্মা, এইডস ও প্যারাসাইট (কৃমি, জিয়ার্ডিয়া) জাতীয় সংক্রমনের ফলে ক্ষুধামন্দা, দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও পুষ্টি শোষণজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে ওজন দ্রুত কমে যায়।

৮. মানসিক সমস্যা

ডিপ্রেশন বা স্ট্রেস ডিজঅর্ডার থাকলে অনেক সময় খাওয়ার ইচ্ছা মরে যায়। আবার অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা এমন একটি সমস্যা যেখানে রোগী ওজন বাড়ার ভয়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। এ ধরনের ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের ওজনের ব্যাপারে পরিবারের খেয়াল করতে হবে।

৯. দীর্ঘস্থায়ী কিডনি বা ফুসফুসের রোগের কারণেও ওজন কমে।

১০. ডিমেনশিয়া বা আলঝেইমার্স রোগী অন্য সব কিছুর সঙ্গে খেতেও ভুলে যায়। তাই তাদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও ওজন কমে যেতে পারে।

কখন ডাক্তার দেখাবেন?
১. ছয় মাসে শরীরের মোট ওজনের ৫ শতাংশের বেশি ওজন কমে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২. দুর্বলতা, জ্বর বা ক্রমাগত পেটের সমস্যা থাকলে এটি এড়িয়ে যাওয়া উচিত না।

৩. লম্বা সময় ধরে খাওয়ার রুচি একদম কমে গেলে চিকিৎসককে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *