সবজির দাম নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে তিন–চার (শীত মৌসুম) মাস ধরে যে স্বস্তি ছিল, সেটি আর নেই। কারণ, বাজারে এখন কম দামে সবজি পাওয়া যায় না। অধিকাংশ সবজির দামই ৮০ টাকার ওপরে। পাশাপাশি দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও মুরগির ডিমের। এ ছাড়া আগের মতোই বাড়তি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা–বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্যগুলো জানা গেছে।
গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে করলা, পটোল, বরবটি, শজনে, ধুন্দুল, ঝিঙা, লতি—এসব সবজি ৮০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল। বেগুন, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গার কেজি ছিল ৫০–৬০ টাকা।
গতকাল ঢাকার তিনটি বাজার ঘুরে ১৫ ধরনের সবজির দরদাম সম্পর্কে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। তাতে দেখা যায়, অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ, আট ধরনের সবজির দামই ৮০ টাকার ওপরে। যেমন প্রতি কেজি বরবটি, কচুর লতি, পটোল, চিচিঙ্গা, বেগুন ও শালগমের দাম রাখা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা করে। কাঁকরোল ও শজনের দাম আরও বেশি। প্রতি কেজি কাঁকরোল ১২০ টাকা ও শজনে ১৪০–১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে করলা, লাউ, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স ও পেঁপের কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকা। কম দামের মধ্যে রয়েছে শুধু টমেটো, তা–ও কেজি ৪০–৫০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০–২৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০–১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য গত বছরের এই সময়েও বাজারে সবজির দাম বেশ চড়া ছিল। যেমন গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে করলা, পটোল, বরবটি, শজনে, ধুন্দুল, ঝিঙা, লতি—এসব সবজি ৮০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল। বেগুন, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গার কেজি ছিল ৫০–৬০ টাকা।
সবজির চড়া দামের বিষয়ে বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার বলেন, এ বছর রমজান মাস পর্যন্ত শীত মৌসুমে সবজির প্রচুর সরবরাহ ছিল; দামও অনেক কম ছিল। তবে এতে অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। বর্তমানে যেসব সবজি আসছে, সেগুলোর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি। এসব কারণে বর্তমানে উৎপাদনস্থলেই সবজির দাম বাড়তি রয়েছে।
দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও ডিমের
বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম আরও বেড়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ টাকা; আর এক মাসের মধ্যে এ দাম ২০–২৫ টাকা বেড়েছে। গতকাল খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। পাড়া–মহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। এ ছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা। অবশ্য এ ধরনের পেঁয়াজের সরবরাহ খুব কম।
এক সপ্তাহের মধ্যে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়, যা গতকাল ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। তবে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কম রয়েছে। বৃহস্পতিবার এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০–১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০–২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ বছর রমজান মাস পর্যন্ত শীত মৌসুমে সবজির প্রচুর সরবরাহ ছিল; দামও অনেক কম ছিল। তবে এতে অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। বর্তমানে যেসব সবজি আসছে, সেগুলোর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক বেশি। এসব কারণে বর্তমানে উৎপাদনস্থলেই সবজির দাম বাড়তি রয়েছে।
বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার
বাজারে সরু তথা মিনিকেট চালের দাম কমেনি। বিক্রেতারা জানান, এখন বোরো ধানের মৌসুম চলছে। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র দু–একটি ব্র্যান্ডের বোরো ধানের মিনিকেট চাল বাজারে এসেছে। তাতে সার্বিকভাবে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। যেমন বর্তমানে খুচরা দোকানে ডায়মন্ড, মঞ্জুর, সাগর ইত্যাদি ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল মিনিকেটের কেজি ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। এ ছাড়া ধরনভেদে নাজিরশাইল ৮০–৯৫ টাকা, ব্রি–২৮ চাল ৬০ টাকা ও স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রমজান মাসে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কিছুটা আরামে ছিলাম। এরপর একে একে চাল, সয়াবিন তেল ও ডিমের দাম বাড়ল। সবজির দামও ক্রয়সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের কষ্টও বাড়ছে।
তালতলা এলাকার বাসিন্দা সাব্বির আলম
এদিকে ১৫ এপ্রিল বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়। তবে দাম বাড়লেও বাজারে চাহিদার তুলনায় বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ কিছুটা কম বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
রাজধানীর আগারগাঁও তালতলা এলাকার বাসিন্দা সাব্বির আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রমজান মাসে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কিছুটা আরামে ছিলাম। এরপর একে একে চাল, সয়াবিন তেল ও ডিমের দাম বাড়ল। সবজির দামও ক্রয়সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এর সঙ্গে আমাদের কষ্টও বাড়ছে।’
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এডভোকেট হায়দার , প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জাতিসংঘ (U.N ) তালিকাভূক্ত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কম্বাইন্ড ল রাইটস ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন ।
প্রধান কার্যালয় : গাজীপুর জজকোর্ট সংলগ্ন এফ ১০২/১৫ হাক্কানী হাউজিং সোসাইটি,গাজীপুর, ঢাকা। মোবাইল নম্বর : 01701 331047