ম্যাচ কমিশনারকে ধাক্কা মেরে ৬ মাস নিষিদ্ধ হামজার ‘সিলেটি ভাই’


গত ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। সেই ম্যাচ খেলতে এসে জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াড়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা এই তারকার। তাদের একজন সাদ উদ্দিন। হামজা আর সাদ দুজনেরই বাড়ি সিলেটে। হামজার সেই ‘সিলেটি ভাই’ এবার নিষেধাজ্ঞার কবলে আটকা পড়েছেন।
এমন একটা শাস্তির আভাস কদিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত গতকাল মধ্যরাতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আগামী ছয় মাস বাফুফে আয়োজিত কোনো ফুটবল ম্যাচে খেলতে পারবেন না সাদ উদ্দিন। ম্যাচ কমিশনার সুজিত ব্যানার্জিকে ধাক্কা মারায় এমন শাস্তিই পেয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের এই ডিফেন্ডার।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২ মে কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা-আবাহনীর ম্যাচে ডিফেন্ডার সাদ ম্যাচ অফিশিয়ালকে ধাক্কা দেওয়ায় আগামী ৬ মাস বাফুফে কর্তৃক আয়োজিত কোনো ধরনের ফুটবলে অংশ নিতে পারবেন না সাদ। সিদ্ধান্তটি হয়েছে ১৪ মে বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটির সভায়। সেদিন থেকে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বাফুফের নিষেধাজ্ঞায় থাকবেন কিংসের সাদ। একই সঙ্গে তাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও দিতে হবে।
অবশ্য ১০ জুন বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলতে বাধা নেই সাদের। বাংলাদেশ দলে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার বেশ পছন্দের ডিফেন্ডার সাদ। জাতীয় দলের বেশির ভাগ ম্যাচে অনেকটাই ‘অটো চয়েস’। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর বিপক্ষে মেজাজ হারিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের বিপদই ঢেকে আনলেন তিনি। একই ম্যাচে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করায় কিংসের সহকারী কোচ মাহবুব হোসেনকে (রক্সি) চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত বুধবার বাফুফের পাঁচ সদস্যের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় হয়েছে আরও কিছু সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে বসুন্ধরার মাঠ কিংস অ্যারেনায় সমর্থক ও সাধারণ দর্শকদের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কার্যকলাপ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একাধিকবার কিংস অ্যারেনায় দর্শকদের দ্বারা শৃঙ্খলাবহির্ভূত ঘটনা ঘটায় পরবর্তী ছয়টি হোম ম্যাচ দর্শকশূন্য রাখার স্থগিত শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ মাসে দর্শকেরা শৃঙ্খলাবহির্ভূত কোনো কাজ করলে সেই শাস্তি কার্যকর হবে।
সম্প্রতি প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের (বিসিএল) তিনটি ম্যাচে রেফারি মারধরসহ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোও গত বুধবারের সভায় পর্যালোচনা করে বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটি। এরপর বিভিন্ন মেয়াদ ও ধারা অনুযায়ী দেওয়া হয় শাস্তি, যার মধ্যে ১১ মে ফর্টিস এফসির মাঠে সিটি ক্লাব ও বাফুফে এলিট একাডেমির ম্যাচ শেষে রেফারি জিম এম চৌধুরী নয়ন মারধরের ঘটনায় সিটি ক্লাবকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পাশাপাশি ক্লাবের গোলকিপার শাহ আলম ও চার ফুটবলার মাসুম মিয়া, মিজানুর রহমান, আশরাফুল ইসলামকে এক বছরের জন্য বাফুফে আয়োজিত সব ধরনের ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ওয়ারী ক্লাব ও ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই ক্লাবের কয়েকজন খেলোয়াড়কেও শাস্তি দিয়েছে বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটি।