কিংবদন্তির বিদায়ে কাঁদলেন গার্দিওলা, মনে রাখতে যা করবে ম্যান সিটি

0
fgjkmyu

গ্যালারি, মাঠ, ধারাভাষ্যকক্ষ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা ডাগআউট—গতকাল রাতে ইতিহাদের সবকিছুই কেভিন ডি ব্রুইনাময়। কেউ যদি বলে গত রাতে পুরো ম্যানচেস্টার শহরটাই ছিল ডি ব্রুইনাময়, তাতেও কোনো বাড়াবাড়ি হবে না।

একজন কিংবদন্তি যখন বিদায় নেবেন, শহরটা তাঁর হয়ে যাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। হয়েছেও তা–ই। এমনকি ডি ব্রুইনার বিদায়ে পেপ গার্দিওলার কান্নাও ফুটবলপ্রেমীদের মনে রয়ে যাবে আরও অনেক দিন। যে দিনটিকে গার্দিওলা নিজেই স্বীকৃতি দিলেন ‘কষ্টের দিন’ হিসেবে।

গত প্রায় এক দশক প্রিমিয়ার লিগে রাজত্ব করেছে ম্যান সিটি। এই এক দশকে শেষ ৮ মৌসুমে ৬টি লিগ শিরোপাই জিতেছে সিটি। যেখানে ৪টি শিরোপা একটানা জিতেছে ক্লাবটি। আর এই ৬ শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক ডি ব্রুইনা। ৬টি প্রিমিয়ার লিগ ছাড়াও যিনি একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুটি এফএ কাপ এবং পাঁচটি লিগ কাপ শিরোপা জিতেছেন।

গার্দিওলার অধীন পুরো সময়টাতে ডি ব্রুইনা ছিলেন সিটির মিডফিল্ডের ‘নিউক্লিয়াস’। লম্বা সময় ধরে পুরো দল খেলেছে তাঁকে ঘিরে। এই সময়ে কার্যকারিতা এবং নান্দনিকতার অনন্য এক দৃষ্টান্তও হয়ে উঠেছিলেন এই বেলজিয়ান তারকা। এমন ফুটবলারকে বিদায় দেওয়া তো সহজ ছিল না! কিন্তু সব ভালো কিছুই নাকি কখনো না কখনো শেষ হতে হয়, সে নিয়ম মেনেই অবশেষে সিটিতে নিজের শেষ ম্যাচটা খেলে ফেললেন ৩৩ বছর বয়সী ডি ব্রুইনা।

সিটির হয়ে ডি ব্রুইনার অভিষেক হয় ২০১৫ সালে সেপ্টেম্বরে। লিগে ক্লাবটির হয়ে সব মিলিয়ে ২৮৪ ম্যাচে করেছেন ৭২ গোল সঙ্গে আছে ১১৯টি গোলে সহায়তাও। আর সব মিলিয়ে সিটির হয়ে ৪২১ ম্যাচে তাঁর গোল ১০৮টি এবং অ্যাসিস্ট ১৭৭টি।

ডি ব্রুইনাকে বিদায় জানাতে আয়োজনে অবশ্য কোনো ঘাটতি রাখেনি সিটিজেনরা। পুরো স্টেডিয়াম অন্ধকার করে দেখানো হলো তাঁর জন্ম দেওয়া স্মরণীয় মুহূর্তগুলো। সেই অন্ধকার ছিঁড়ে এক সময় আলো হয়ে হেঁটে আসলেন ডি ব্রুইনা নিজে। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।

এ সময় দর্শকদের মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইটের আলোর সঙ্গে মাঠের আলো মিলেমিশে একাকার হয়ে তাঁকে যেন বুকে টেনে নিল। ডি ব্রুইনাকে অভিবাদন জানাতে দুই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ক্লাবের খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ডি ব্রুইনার অবদানকে স্মরণ রাখতে ইতিহাদের বাইরে তাঁর ভাস্কর্য বানানোর ঘোষণাও দিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ।

বিদায়ী মুহূর্তে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে ডি ব্রুইনা বলেছেন, ‘আমি সৃষ্টিশীলতা এবং আবেগের সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেছি। আমি ফুটবল উপভোগ করতে চেয়েছি। আমি আশা করি, সবাই সেটা উপভোগ করেছেন। ক্লাবের ভেতরে বাইরে সবাই আমার সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করেছে। আর আমার সামনে থাকা এই মানুষগুলোই আমাকে আগের চেয়ে ভালো বানিয়েছে। এই মানুষগুলোর সঙ্গে খেলতে পারটা সম্মানের। ’

প্রিয় শিষ্যকে নিয়ে গার্দিওলা বলেছেন, ‘সবাই দেখেছে ম্যানচেস্টারের মানুষদের সঙ্গে সে এবং তার পরিবার কতটা জড়িয়ে আছে। তারা তাঁকে কতটা ভালোবাসে। শিরোপা এবং সে যা জিতেছে সব কিছুই দারুণ। কিন্তু ১০ বছর পর কেউ যখন এমন সম্মান পায়, এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। এটা আমাদের জন্য কষ্টের দিন এবং আমরা তাকে মিস করব। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *