২১ বার অস্কার ও ৩৪ বার গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়নে রেকর্ড গড়া এই অভিনেত্রীকে কতটা চেনেন


স্কুলে একটি গানের আয়োজন হতে যাচ্ছে। সেখানে ডাক পড়ে ১২ বছরের এই কিশোরীর। তিনি বাছাইতেও টিকে যায় সেই কিশোরী। গান গেয়ে প্রশংসা পায়। পরে স্কুলের পক্ষ থেকে অপেরা চর্চা করার সুযোগ দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু এই কিশোরীকে আর গানে ধরে রাখা যায়নি। তার আগ্রহ ছিল অভিনয়ে। পরে অভিনয় দিয়ে অস্কার ও গোল্ডেন গ্লোবের মনোনয়ন ও পুরস্কার জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন। সেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপের আজ জন্মদিন। জেনে নিতে পারেন তাঁর জানা–অজানা দিক।
গানচর্চায় মনোযোগ না থাকলেও কলেজে অভিনয়ের সুযোগ কখনোই হাতছাড়া করতেন না। ১৯৬৯ সালে ভাসার কলেজের নাটক ‘মিস জুলি’তে অভিনয় করতে গিয়ে মনে হয়, এটাই তাঁর আসল জায়গা। শিক্ষার্থী থাকার সময়ই সুযোগ খুঁজে অভিনয় করতে থাকেন। ভাসার কলেজের ড্রামা প্রফেসর ক্লিনটন জে অ্যাটকিনসন তরুণ মেরিলের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় না, মেরিলকে কেউ কখনো অভিনয় শিখিয়েছিল। সে নিজেই অনন্য প্রতিভার অধিকারী। সে প্রকৃতিপ্রদত্ত উপহার।’
১৯৭৬ সালে প্রথমবারের মতো সিনেমার নায়িকার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মেরিল ইতালীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা ডিনো ডি লরেন্টিসের সামনে ‘কিং কং’ সিনেমার জন্য অডিশন দিতে যান। শুরুতেই অভিনয়ে তাক লাগিয়ে দেন। পরিচালক বুঝতে পারেন তাঁকে দিয়ে হবে। শুধু তা–ই নয়, উৎসবের বিচারকেরাও তাঁর ওপর নজর রাখেন। কারণ, অভিনয় শুরুর মাত্র তিন বছরের মাথায় ‘দি ডেয়ার হান্টার’ সিনেমার জন্য পার্শ্বচরিত্রে অস্কার মনোনয়ন পান। সে বছর খালি হাতে ফিরলেও পরের বছরই ‘ক্রেমার ভার্সাস ক্রেমার’ সিনেমার জন্য পার্শ্বচরিত্রে অস্কার জেতেন।
অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর। নব্বই দশকে তাঁর ক্যারিয়ার বদলে যেতে থাকে। সেই দশকেই তিনি সাতবার অস্কার মনোনয়ন পান। ‘ক্রেমার ভার্সেস ক্রেমার’ বাদে সব কটি মনোনয়নই পেয়েছেন প্রধান চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে। দীর্ঘ চার দশকের ক্যারিয়ারে অস্কার মনোনয়নে তিনি রেকর্ড গড়েছেন। এ পর্যন্ত মেরিল ২১ বার অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার মনোনয়ন পেয়েছেন, যা এখন পর্যন্ত রেকর্ড। শুধু অস্কারই নয়, তিনি রেকর্ড গড়েছেন গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন ও পুরস্কার অর্জনে। তিনি ক্যারিয়ারে ৩৪ বার গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন পান। এর মধ্যে ৯ বার পুরস্কার ঘরে তোলেন।
ক্যারিয়ারে ভালো সময় কাটলেও ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অতটা হাসিখুশি ছিলেন না। ক্যারিয়ার পাকাপোক্ত হওয়ার আগেই তিনি বিয়ে করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত সেই সংসার ভালোই যাচ্ছিল। স্বামী জন ক্যাজালের সঙ্গে সংসার নিয়ে ভালো সময় কাটানোর মধ্যেই হঠাৎ ক্যাজালের ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ে। প্রথম স্বামী মারা যাওয়ার ছয় মাস পর ভাস্কর ডন গ্যামারকে বিয়ে করেন মেরিল। ৪২ বছরের সংসারজীবনে চার সন্তানের মা হয়েছেন মেরিল।
১৯৪৯ সালের ২২ জুন মেরি লুইস স্ট্রিপ জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির সামিট শহরে। ৭৬ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী এখনো সমানতালে অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত। সর্বশেষ তিনি ‘অনলি মার্ডারস ইন দ্য বিল্ডিং’ টিভি সিরিজ দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। সিরিজটির পরবর্তী কিস্তি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।