সত্যি কথা বলতে তো ভয়ের কিছু নেই: সাদিয়া আয়মান

0
Binodon-20

টেলিভিশন দুনিয়ায় তার পথচলা খুব বেশি দিনের নয়। শিহাব শাহীনের পরিচালনায় ওয়েবফিল্ম ‘মায়াশালিক’ দিয়ে নজর কেড়েছেন সাদিয়া আয়মান। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘কাজলরেখা’ সিনেমায় তার অভিনয় প্রশংসিত হয়। বিনোদন জগতে তার যাত্রা স্বল্প সময়ের হলেও সাহসের নিরিখে অনেক সিনিয়র শিল্পীদের ছাড়িয়ে গেছেন এই অভিনেত্রী।

কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় যখন বেশিরভাগ শিল্পী ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি অবলম্বন করেছেন, সে সময় ফেসবুকে সরব ছিলেন সাদিয়া আয়মান। বিনোদন জগতের কিছু সিনিয়র শিল্পী যখন ছাত্র হত্যার প্রতিবাদ না করে বিটিভিতে গিয়ে অশ্রু ঝরিয়েছেন, তখন ফেসবুকে সেসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে সরব হওয়ার নেপথ্যের গল্প শোনান সাদিয়া আয়মান। তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদ যেদিন মারা গেলেন, সেদিন একটি লেখা পোস্ট করেছিলাম। কাছের মানুষদের অনেকেই বলেছিলেন, এসব পোস্ট করো না, পরে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে তো ভয়ের কিছু নেই। সেজন্য সাহস নিয়ে পোস্ট করি। নিজের মনোভাব প্রকাশ করি। আমি আমার জায়গা থেকে সত্য কথা বলেছি। এখন যে রকম মনের কথা সবাই বলতে পারছেন, এটাই হওয়া উচিৎ’।

পরিবার থেকেও সে সময় তাকে ফেসবুকে পোস্ট করতে নিরুৎসাহিত করা হয়, তবু দমে যাননি সাদিয়া, ‘মা-বাবা ভয় পাচ্ছিলেন। আমাকে বলেছিলেন, যেসব স্ট্যাটাস দিয়েছ, মুছে ফেলো। আমি মা-বাবাকে বুঝিয়েছি, ভুল কিছু তো লিখিনি। সত্যি কথা লিখেছি।’

বিটিভি ভবনে যাওয়া শিল্পীদের নিয়ে পোস্ট করার কারণ জানিয়ে সাদিয়া আয়মান যোগ করেন, ‘আমি সব নিউজ দেখে শিওর হয়েছিলাম উনারা বিটিভিতে গিয়ে কথা বলেছেন, কেউ কেউ কান্নাকাটিও করেছেন। তারপরই আমি স্ট্যাটাস দিই। তখনো কেউ কেউ স্ট্যাটাস মুছে ফেলতে বলেছিলেন। আমি বলেছিলাম, যদি কান্নাকাটি সত্যি না হয়, তাহলে সরি বলে ডিলিট করে দেবো। কিন্তু পরে তো সবাই জানতে পারে কান্নাকাটি করাটা সত্যি ছিল। সিনিয়র হিসেবে তাদের সবসময় শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাদের কান্নাকাটির বিষয়টি ভালো লাগেনি।’

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সফল হয়েছে। গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তাদের কাছে কী প্রত্যাশা, তা জানতে চাইলে তরুণ প্রজন্মের এই অভিনেত্রী বলেন, ‘অনেক প্রত্যাশা। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হোক। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ হোক। মিথ্যা মামলায় অনেকে শাস্তি পেয়েছেন, অনেকে গুম হয়েছেন। এসবের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হোক।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *